Parenting Point

অসুখ বিসুখ

শিশুর এডিনয়েড সমস্যা

adenoid

শীতকালে সাধারণত শিশু ও কিশোরদের ঠান্ডা-সর্দি জনিত নানা রোগ বাড়তে দেখা যায়। বিশেষ করে নাক, গলা ও কানের সমস্যা বেড়ে যায় এই সময়ে। যাদের সারা বছর ঠান্ডা, সর্দি, কাশি লেগে থাকে তাদের নাকের পেছনে মাংস বেড়ে যেতে পারে। এমনটি হলে শিশুদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, নাক বন্ধ থাকার কারনে নাক দিয়ে না নিয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়। নাক ডাকা এমনকি ঘুমের মধ্যে কখনও হঠাৎ দম বন্ধ হয়ে ঘুম ভেংগে যেতে পারে। এটা হয় এডিনয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়ার কারণে। এডিনয়েড গ্রন্থি কী, কেন এটা বড় হয়? আমাদের নাকের একদম পেছনে নাক ও গলার সংযোগ স্থলে এডিনয়েড নামক একটা লসিকা গ্রন্থি থাকে। এটি গঠনগত দিক থেকে টনসিলের মতো। এডিনয়েড বাইরে থেকে দেখা যায় না। কারণ আমাদের নরম তালুর ওপরে এডিনয়েড থাকে। তাই এটা খালি চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এডিনয়েড দেখতে হলে এক্স-রে করতে হয়। এখন উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় বা বিশেষ ধরনের এন্ডোস্কোপ (Nasoendoscope) দিয়ে সরাসরি দেখা যেতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, ঘন ঘন ঠান্ডা-সর্দি লাগার কারণে নাকের পেছনে এডিনয়েড বড় হতে আরম্ভ করে। এটা সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। তবে এটা কিশোর বয়সেও হতে দেখা যায়। লক্ষ্মণ /উপসর্গ: এডিনয়েড গ্রন্থি বড় হলে কিছু সাধারণ সমস্যা দেখা যায়, যা শিশুর মুখমণ্ডল এর আকৃতি স্থায়ী ভাবে পরিবর্তন করে দিতে পারে। একে বলে এডিনয়েড ফেসিস। যেসব সমস্যা হয় সেগুলো নিন্মরুপ: ১. শিশু মুখ হাঁ করে থাকে বা ঘুমায়। ঘুমের মধ্যে শব্দ বা নাক ডাকা হয়। এ সমস্যা বেশি মাত্রায় হলে ঘুমের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য দম বন্ধ থাকতে পারে। যাকে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ এপনিয়া বলে। ২. এ ধরনের শিশুরা সাধারণত ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে ভোগে। একবার সদি-কাশি হলে তা সহজে সারতে চায় না। ৩. কানে ঘন ব্যথা, কানে ইনফেকশন, কানের পর্দা ফেটে যাওয়া, কানের ভেতর পানি জমা, কানে কম শোনা বা গ্লু ইয়ার সমস্যা হতে পারে। নাক ও কানের সংযোগ কারী রাস্তা বা ইউস্টেশিয়ান টিউব বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা হতে দেখা যায়। ৪. এডিনয়েডের কারণে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার কারণে ঘন ঘন গলার ইনফেকশন, খুসখুসে কাশি, গলার স্বর বসে যাওয়া হতে পারে। কারও কারও টনসিলএ প্রদাহ বা টনসিল বড় হতে দেখা যায়। ৫. শরীরের ভেতর অক্সিজেনের স্বল্পতার জন্য ঘুম ঘুম ভাব, পড়ালেখা ও স্কুলে অমনোযোগী হওয়া, বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। স্কুল পড়ুয়া শিশুদের ফলাফল অনেকটাই কমে যায়। কারও কারও রাতে বিছানায় প্রস্রাব ও করতে দেখা যায়। ৬। মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়ার কারণে শিশুর খাবার গ্রহণে বিলম্ব কিংবা অসুবিধা হয়। এ ছাড়া শিশুর মুখের কোনা দিয়ে লালা পড়তে পারে। ৭। উচ্চারণে সমস্যা বা হট পটেটো ভয়েস। ৮। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে শিশুর উপরের পাটির সামনের দাঁত সামান্য উঁচু হয়ে যায়, মাড়ি নরম হয়ে পড়ে, নাক বোঁচা হয়ে যায়, সর্বোপরি চেহারায় একটা হাবাগোবা ভাব চলে আসে। সামগ্রিকভাবে শিশুর মুখমন্ডল এর এই পরিবর্তনকে বলা হয় এডিনয়েড ফেসিস। চিকিৎসা: ১। বাচ্চাদের এ সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এমন হলে বয়সভেদে এন্টি-হিস্টামিন, ডিকনজেস্টেন্ট ও স্টেরয়েড জাতীয় নাকের স্প্রে/ড্রপ এবং প্রয়োজনবোধে এন্টিবায়োটিক দিয়ে মেডিকেল চিকিৎসা করা হয়। সমস্যা অল্প থেকে মাঝারি মাত্রায় হলে মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট ও দীর্ঘমেয়াদি ফলোআপ এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আসে। ২। পাশাপাশি কানে শুনার পরীক্ষাও করে নিতে হয়। এডিনয়েড এর কারণে কানে পানি জমলে বা শুনানি কমে গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হয়। ৩। এডিনয়েড বেশী বড় হলে বা মেডিকেল ট্রিটমেন্ট এ কাজ না হলে অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করাতে হয়। কানের সমস্যা থাকলে সেটাও একই সময় অপারেশন করা যায়। অনেক মা-বাবা অপারেশনের কথা শুনেই ভয় পেয়ে যান। কিন্তু জেনে রাখা উচিত, এখন উন্নত বিশ্বের মত আমাদের দেশেও এডিনয়েডের শতভাগ সফল অপারেশন নিয়মিত হচ্ছে। কখন অস্ত্রোপচার করাবেন? বয়স বাড়ার সাথে সাথে এডিনয়েড ছোট হতে থাকে।কিন্তু অনেক সময় শিশুর বয়স ১২-১৪ বছর হলেও এডিনয়েড স্বাভাবিক মাত্রায় আসে না। পর্যাপ্ত ব্যবস্থার পরও শিশুর কষ্ট দীর্ঘতর হলে বা এডিনয়েড যদি কম বয়সেই বেশী মাত্রায় বড় হয় সেক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে এডিনয়েড এর বাড়তি অংশ ফেলে দিতে হয়, যা একটি নিরাপদ সার্জারি। টনসিলেকটমির মতোই এডিনয়েডেকটমিও একই প্রকৃতির অপারেশন। এ অপারেশনে চিকিৎসক মুখের ভেতর দিয়ে এডিনয়েডটি কেটে ছোট করে দেন। এডিনয়েড যেহেতু পরবর্তীকালে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, তাই এই অঙ্গ বাদ দিলেও শিশুর কোন সমস্যা হয় না। তাছাড়া এডিনয়েড ও টনসিল ছাড়াও গলায় আরও বেশ কিছু লসিকাগ্রন্থি থাকে। এডিনয়েড সার্জারির উপযোগিতা সমূহ নিন্মরুপ: ১. যদি নাক প্রায়ই বন্ধ থাকে এবং এক্স-রে করে তার প্রমাণ পাওয়া যায় তবেই অস্ত্রোপচার করাতে হবে। ২. এডিনয়েড বড় হয়ে যাওয়ার কারণে যদি মধ্য-কর্ণে বারবার ইনফেকশন বা ব্যথা হয় এবং মধ্য-কর্ণে তরল পদার্থ জমে আটকে থাকে অথবা এর কারণে কানে কম শুনলে। ৩. বাচ্চা যদি ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে, বা ঘুমাতে সমস্যা হয়। ৪. ঘুমের মধ্যে যদি শিশুর দম বন্ধ (স্লিপ এপনিয়া) অবস্থা হয়। কেন চিকিৎসা করবেন? মেডিকেল চিকিৎসা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের পর শিশু ক্রমশ সুস্থ হয়ে ওঠে, শিশুর নাক বন্ধ অবস্থার উন্নতি হয়। এ সময়ে শিশুকে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। এক পর্যায়ে শিশু মুখ বন্ধ করে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে শুরু করে। নাক ডাকা কমে যায়। অ্যালার্জি থাকলে চিকিৎসা বা অপারেশনের পরও শিশুকে অ্যালার্জির জন্য দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা ও ফলো আপ প্রয়োজন হয়। অপারেশনের দুই-তিন দিনের মধ্যেই শিশু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে শিশু সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।  চিকিৎসা না করালে কি হয়? গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে শিশুর নাক বন্ধ থাকার কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। এর ফলে শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ বিঘ্নিত হয়। ফলে শিশুর বুদ্ধির বিকাশ কম হয়। এছাড়া শিশু ক্রমাগতভাবে কম শোনার কারণে ক্লাসে অমনোযোগী হয়ে পড়ে, পড়াশোনায় খারাপ করে এবং শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়। একপর্যায়ে শিশুর মধ্য-কর্ণের ইনফেকশন জটিল হয়ে কানের পর্দা ফুটো করে দেয় এবং শিশু কানপাকা রোগের নিয়মিত রোগী হয়ে যায় অর্থাৎ দীর্ঘস্থায়ী কানপাকা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। প্রতিকার: যাদের এডিনয়েডের কারণে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তাদের স্টেরয়েড স্প্রে, নাকের ডিকনজেস্টেন্ট ড্রপ (সাময়িক), এলার্জি, ঠাণ্ডা, ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেয়া হয়। এতেই দেখা যায় অধিকাংশেরই সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। যাদের দীর্ঘদিন ঔষধ নেওয়ার পরও সমস্যা থেকে যায় শুধুমাত্র তাদের ক্ষেত্রে অপারেশনের বিষয় বিবেচনায় আসতে পারে। তাই, এরকম কিছু দেখলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন।

শিশুর এডিনয়েড সমস্যা Read More »

হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিস (HFMD)

হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিস (HFMD)

ডাঃ মায়িশা হোসেন  MBBS Training/Course: PGT (Gynae & Obs) হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিস (Hand, Foot, and Mouth Disease) একটি সংক্রামক রোগ যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের মধ্যে দেখা যায়, বিশেষ করে যাদের বয়স ৫ বছরের নিচে। হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিস বর্তমানে খুবই কমন একটা রোগ যেটিতে দেখা দেয় জ্বর, মুখে ঘা এবং শরীরে র‍্যাশ। এটি একটি অতিমাত্রায় সংক্রামক রোগ। তবে ৭-১০ দিনে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। কেনো হয় ? এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এটি কক্সস্যাকি ভাইরাস এবং এনটেরোভাইরাস গ্রুপের বেশ কিছু ভাইরাস দ্বারা হতে পারে। যেহেতু বিভিন্ন ভাইরাস দ্বারা হতে পারে সেহেতু এটি জীবনে একাধিক বার হতে পারে। কাদের হয়  এটি সাধারণত ইনফ্যান্ট (১বছরের ছোট বাচ্চা) এবং মূলত ৫ বছরের নিচে বাচ্চাদের বেশি হয়ে থাকে। তবে এটা যেকোন বয়সেই হতে পারে। লক্ষণ কি কি ? সাধারণত প্রথমে লো গ্রেড ফিভার অর্থাৎ নিম্নমাত্রার জ্বর(১০১ এর কম) দেখা দেয়। জ্বরের ২৪ ঘন্টার মধ্যে মুখে কিছু র‍্যাশ এবং ঘা দেখা দিতে পারে, যেগুলো সাধারণত ব্যথা দায়ক হয়। বাচ্চারা খাবার খেতে চায় না, গিলতে কষ্ট হয়, রুচি কমে যায়। মুখ দিয়ে লালা পড়তে পারে। মুখে ঘায়ের ১-২ দিন পর হাতে পায়ে র‍্যাশ দেখা দেয়। প্রথমে ফ্ল্যাট, এরপর চামড়া থেকে উঁচু হয়,এরপর কিছু কিছু পেকে যায়,পরবর্তীতে সেগুলো ফেটে যায়, এরপর শুকিয়ে যায়। র‍্যাশগুলোতে চুলকানি থাকতেও পারে নাও পারে। ছোট বাচ্চাদের বাটক অর্থাৎ নিতম্বেও র‍্যাশ দেখা দিতে পারে, কুচকিতেও দেখা দিতে পারে। কিভাবে ছড়ায় হাঁচি, কাশি উপরন্তু কথার মাধ্যমে যেসকল ড্রপলেট বের হয় যেসকল জিনিসপত্রে আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শ থাকে র‍্যাশ ফেটে যে তরল বের হয় আক্রান্ত ব্যাক্তির পায়খানা এসকলের মাধ্যমেই HFMD ছড়াতে পারে । প্রতিরোধের উপায় এটি খুবই খুবই সংক্রামক। তারপরও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ঘন ঘন হাত ধুতে হবে, বড়রাও ধুবে, ছোটদেরও একটু পর পর হাত ধোয়ার অভ্যাস করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যাক্তির ব্যবহার্য জিনিসপত্র, খেলনা একটু পর পর ডিসইনফেকট্যান্ট দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে আক্রান্ত ব্যাক্তি অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখবে প্রতিকার হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিস এর কোনো প্রতিকার নেই। কোনো ঔষধ নেই,কোনো ভ্যাক্সিন নেই। নিজে নিজেই ৭-১০ দিনে ঠিক হয়ে যায়। তবে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে উপসর্গ অনুযায়ী — প্যারাসিটামল এন্টিহিস্টামিন কখন স্কুলে যেতে পারবে? জ্বর নেই শরীর ভালো লাগছে মুখ দিয়ে কোনো লালা বের হচ্ছে না র‍্যাশ যেতে ১-২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।  হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিস গুরুতর না হলেও এতে শিশুদের ভোগান্তি হতে পারে। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সাবধানতা অবলম্বন করলে এ রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিস (HFMD) Read More »

এমপক্স (মাঙ্কিপক্স)

এমপক্স ১৯৫৮ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে পরীক্ষাগারে বানরের মধ্যে প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৭০ সালে কঙ্গোতে মানুষের মধ্যে প্রথম শনাক্ত করা হয়। এমপক্স নামে এক ধরনের ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। অনেকটা জল বসন্তের ভাইরাসের মতো বৈশিষ্ট্যের হলেও এর ক্ষতিকারক প্রভাব ও সংক্রমণের হার কম। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার নিরক্ষীয় বনাঞ্চলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এমপক্স দুই ধরনের – মধ্য আফ্রিকান পশ্চিম আফ্রিকান এমপক্স কিভাবে ছড়ায়? সাধারণত ত্বকে কাটা ছেঁড়া থাকলে, মিউকোসাল সারফেস যেমন মুখ, গলা, চোখ, যৌনাঙ্গের মাধ্যমে এমনকি শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেও এ রোগ হতে পারে। ত্বকের মধ্যে লেসন থাকলে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। সাধারণত স্পর্শ, চুম্বন, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে এই রোগ ছড়ায়। এমনকি ফেস টু ফেস কথা বললে, শ্বাস নিলেও ছড়াতে পারে। আক্রান্ত প্রাণীর কামড়, স্ক্র্যাচ, শিকার করা, চামড়া ছড়ানো, রান্না করা থেকেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত দ্রব্য যেমন কাপড়, চাদর, সুঁই ব্যবহার করলেও সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। আক্রান্ত গর্ভবতী মা থেকে গর্ভের সন্তান ও আক্রান্ত হতে পারে। এমপক্স এর লক্ষণ কি? এমপক্স একটি ভাইরাল সংক্রামক রোগ। সংক্রমণের ১-২১ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। প্রধান লক্ষণ হলো র‍্যাশ। ২-৪ সপ্তাহ র‍্যাশের পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোও থাকতে পারে— জ্বর গলাব্যথা মাথাব্যথা মাংসপেশিতে ব্যথা দূর্বলতা লিম্ফনোড বা লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া অনেকের অসুস্থতা প্রথমে র‍্যাশ দিয়ে শুরু হয়। অনেকের এমন নাও হতে পারে। অনেকে চিকেন পক্স বা অন্যান্য অসুখের র‍্যাশের সাথে এটিকে মিলিয়ে ফেলতে পারেন। এই র‍্যাশ প্রথমে ফ্ল্যাট থাকে, পরে তরলপূর্ণ ব্লিস্টারে পরিণত হয়। র‍্যাশে ব্যথা বা চুলকানিও হতে পারে। র‍্যাশ একসময় শুকিয়ে ঝরে পড়ে। সাধারণত হাতের তালু, পায়ের পাতা, মুখ,গলা, কুচকি, যৌনাঙ্গ ও পায়ুতে র‍্যাশ বেশি হতে পারে। এর পাশাপাশি পায়ুপথে ব্যথা বা রক্তপাতও হতে পারে। এমপক্স আক্রান্ত হলে কি করবেন? সকল ক্ষত বা স্ক্যাব ঝরে পড়ে নতুন চামড়া উঠা পর্যন্ত ঘরে থাকুন। বাইরে বের হলে ক্ষত ঢেকে রাখুন এবং মাস্ক পরুন। অন্য মানুষের সাথে সরাসরি স্পর্শ এড়িয়ে চলুন । মুখের ঘার জন্য লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করুন। সাধারণত ভাইরাল অসুখগুলোর ওষুধ থাকেনা। যে যে লক্ষন থাকে সেগুলোর চিকিৎসা নিতে হয়। যেমন র‍্যাশ হলে সেটির যত্ন নিন, ব্যথা হলে সেটির জন্য ওষুধ খান। এমপক্স প্রতিরোধে যা করতে হবেঃ কোভিডের সময় আমরা যেসব সাবধানতা অবলম্বন করতাম, আবার সেই অভ্যাসগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। যেমন — বারবার সাবান, হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। স্বামী বা স্ত্রীর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা গেলে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকুন। অন্য কারো ব্যবহৃত সামগ্রী ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অন্তত ১ মিটার দূরত্ব রেখে চলুন। আক্রান্ত পশুপাখি এড়িয়ে চলুন। যেসকল এলাকায় এই রোগ ছড়িয়েছে সেই এলাকায় ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।

এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) Read More »