বিশ্বজুড়ে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো সময়ের আগেই শিশুর জন্ম বা প্রিম্যাচুর ডেলিভারি। যেসব শিশু ৩৭ সপ্তাহের আগে জন্ম নেয়, তাদের প্রিটার্ম শিশু বলা হয়। জন্মের পর থেকেই এদের বাড়তি যত্ন ও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, না হলে অনেক ক্ষেত্রে তাদের বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে—বিশেষত বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে। মা ও শিশুর যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা, সচেতনতা, ও আন্তর্জাতিক নির্দেশনা মেনে চলার মাধ্যমেই এই সমস্যা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ নিবন্ধে প্রিম্যাচুর শিশুর কারণ, ঝুঁকি, প্রতিকার ও যত্নের বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
প্রিটার্ম শিশু কারা?
যেসব শিশুর জন্ম গর্ভধারণের পূর্ণ ৩৭ সপ্তাহের আগেই হয়, তাদেরকে প্রিটার্ম শিশু বলা হয়। গর্ভের সময়কাল অনুসারে এই শিশুদের আবার বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়:
- মারাত্মক প্রিটার্ম (Extremely Preterm): ২৮ সপ্তাহের আগেই জন্মায়।
- অতিরিক্ত প্রিটার্ম (Very Preterm): ২৮-৩২ সপ্তাহের মধ্যে জন্মায়।
- মধ্যম থেকে দেরিতে প্রিটার্ম (Moderate to Late Preterm): ৩২-৩৭ সপ্তাহের মধ্যে জন্মায়।
প্রিটার্ম জন্ম সাধারণত দুইভাবে হয়ে থাকে —
- প্রসব ব্যথা নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু হয়ে যাওয়া।
- মায়ের জটিল শারীরিক অবস্থার কারণে জরুরি সিজারিয়ান প্রসব।
প্রিম্যাচুর শিশুর ঝুঁকি ও জটিলতা
সময়ের আগে জন্মানো এই শিশুদের জন্য জীবনের শুরু থেকেই লড়াই শুরু হয়। তাদেরকে বহু শারীরিক ও মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, যেমন:
- শেখার অক্ষমতা বা মনোযোগে ঘাটতি।
- শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা।
- শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেন ঘাটতি।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় ঘন ঘন ইনফেকশন।
- স্নায়ুজনিত জটিলতা ও বিকাশে বাধা।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবতা
বাংলাদেশের মতো একটি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে, প্রিটার্ম শিশুর যত্ন নেওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ৩২ সপ্তাহের আগেই জন্মানো শিশুদের বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। কারণগুলো হলো:
- আধুনিক নবজাতক পরিচর্যা ইউনিট (NICU) অনেক হাসপাতালেই নেই।
- পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ ও ইনকিউবেটরের ঘাটতি।
- স্বল্পআয়ের পরিবারের পক্ষে উন্নত চিকিৎসা খরচ চালানো কঠিন।
- বুকের দুধ খাওয়ানোতে সমস্যা, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও কমিয়ে দেয়।
উন্নত দেশ বনাম উন্নয়নশীল দেশ
উন্নত বিশ্বে যেখানে NICU, ভেন্টিলেটর, সার্বক্ষণিক ডাক্তার ও নার্সের সুবিধা সহজলভ্য, সেখানে সময়ের আগেই জন্মানো শিশুরাও সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে। কিন্তু বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে এই প্রযুক্তির অভাব এবং সচেতনতার ঘাটতির কারণে প্রিম্যাচুর শিশুদের মৃত্যুর হার এখনও অনেক বেশি। আর যারা বেঁচে থাকে, তাদের অনেকেই সারা জীবন নানা অক্ষমতা বয়ে বেড়ায়।
নির্ধারিত সময় বা ডেলিভারি ডেটের আগে কেন একটি শিশুর জন্ম হয়?
একটি গর্ভাবস্থার পূর্ণ মেয়াদ সাধারণত ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহের মধ্যে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায়, একটি শিশু নির্ধারিত সময়ের আগেই—৩৭ সপ্তাহের পূর্বে—জন্ম নেয়। এধরনের সময়ের আগেই জন্ম নেওয়া শিশুকে বলা হয় প্রিটার্ম (preterm) বা অপরিণত শিশু। কিন্তু কেন এমনটি ঘটে? এর উত্তর সবসময় সহজ নয়।
আগেভাগে শিশুর জন্ম হওয়ার পেছনে সম্ভাব্য কারণগুলো
১. অজানা কারণেই প্রিটার্ম ডেলিভারি:
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আগেভাগে শিশুর জন্ম হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক অগ্রগতি করলেও এখনো প্রিটার্ম বাচ্চা জন্মের সব কারণ পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি। অনেক সময় সম্পূর্ণ সুস্থ মা ও গর্ভাবস্থাতেও হঠাৎ করে প্রসবের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।
২. গর্ভকালীন জটিলতা ও রোগ সংক্রমণ:
মায়ের শরীরে কোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়াল বা ভাইরাল সংক্রমণ, যেমন: মূত্রনালীর ইনফেকশন, অ্যামনিওটিক থলি ফেটে যাওয়া, জরায়ুতে প্রদাহ ইত্যাদি ঘটলে, তা প্রিটার্ম লেবারের ঝুঁকি বাড়ায়।
৩. গর্ভবতী মায়ের দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক সমস্যা:
মায়ের যদি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড সমস্যা বা কিডনির জটিলতা থেকে থাকে, তাহলে নির্ধারিত সময়ের আগে ডেলিভারি করানোর প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় মায়ের জীবন রক্ষার্থে সিজারিয়ান ডেলিভারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৪. একাধিকবার গর্ভধারণ বা বহু সন্তান গর্ভে থাকা:
যদি মা অতীতে একাধিকবার গর্ভবতী হয়ে থাকেন, অথবা গর্ভে যমজ বা একাধিক শিশু থাকে, তাহলে জরায়ুতে চাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে আগেভাগে প্রসবের সম্ভাবনা বাড়ে।
৫. জীবনযাপন ও পরিবেশগত কারণ:
অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ধূমপান, মাদক গ্রহণ, অপুষ্টি বা অপর্যাপ্ত গর্ভকালীন যত্ন—এসব বিষয়ও প্রিটার্ম ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রিটার্ম শিশুর জন্মের পেছনের অজানা কারণগুলো উদ্ঘাটন করার জন্য। উন্নত মনিটরিং ও চিকিৎসা পদ্ধতি থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রেই কেন শিশু আগে জন্মায়, সেটি অনির্ধারিতই থেকে যায়। ভবিষ্যতে আরও গবেষণার মাধ্যমে হয়তো এই প্রশ্নের উত্তর স্পষ্টভাবে পাওয়া যাবে।
কোন দেশে এবং কখন প্রিটার্ম শিশু বেশি জন্মায়?
প্রিটার্ম বা অকাল প্রসব বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা। গর্ভধারণের ৩৭ সপ্তাহের আগেই যখন কোনো শিশু জন্ম নেয়, তখন তাকে প্রিটার্ম শিশু বলা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর প্রায় ১৫ মিলিয়ন প্রিটার্ম শিশু পৃথিবীতে জন্মায় এবং এর মধ্যে একটি বিশাল অংশই দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোতে।
কোথায় সবচেয়ে বেশি প্রিটার্ম শিশু জন্মায়?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইউনিসেফ-এর মতে, দক্ষিণ এশিয়া এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রিটার্ম জন্মের হার সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া এবং ইথিওপিয়া—এই দেশগুলোতে অকাল প্রসব একটি প্রচলিত এবং উদ্বেগজনক সমস্যা। এসব অঞ্চলে গর্ভবতী মায়েদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা, পুষ্টি ও সচেতনতার অভাবের কারণে প্রিটার্ম শিশুর জন্ম হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
কোনো দেশে জন্ম হলে প্রিটার্ম শিশুর বাঁচার সম্ভাবনা বেশি?
প্রিটার্ম শিশুর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকাংশেই নির্ভর করে সে কোনো দেশে জন্মগ্রহণ করেছে তার ওপর। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এই ঝুঁকি বহুগুণ বেশি। উদাহরণস্বরূপ:
- বাংলাদেশের মতো একটি নিম্ন আয়ের দেশে, যদি অতিরিক্ত প্রিটার্ম শিশু (২৮ সপ্তাহের আগে জন্ম নেওয়া) জন্মায়, তাহলে ৯০% এর বেশি শিশু মারা যায়। কারণ, এখানে অনেক সময় নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয় NICU সুবিধা, উন্নত চিকিৎসা ও প্রশিক্ষিত জনবল যথেষ্ট নয়।
- অন্যদিকে, উন্নত দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্রে, একই ধরনের প্রিটার্ম শিশুদের মধ্যে মৃত্যুহার মাত্র ১০%। উন্নত মেডিকেল সাপোর্ট, ইনকিউবেটর, নিউনেটাল কেয়ার এবং মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রযুক্তি-নির্ভর ব্যবস্থা এই পার্থক্য গড়ে দেয়।
কেন এই ব্যবধান?
এই ব্যবধানের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন কারণ, যেমন:
- প্রসবপূর্ব পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়া।
- জরুরি চিকিৎসা ও ইনকিউবেটরের অভাব।
- গর্ভাবস্থায় অপুষ্টি ও সংক্রমণ।
- গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি।
- অপ্রশিক্ষিত ধাত্রী বা স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে প্রসব।
কীভাবে অকাল জন্ম প্রতিরোধ করা যায়?
অকাল জন্ম বা প্রিটার্ম ডেলিভারি নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই একজন মায়ের সুস্থ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন সুস্থ মা-ই পারে একটি সুস্থ ও পূর্ণমেয়াদি শিশুর জন্ম দিতে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, প্রিটার্ম ডেলিভারি প্রতিরোধের জন্য মায়েদের সুস্থতা বজায় রাখা, সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ, এবং নিয়মিত চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো কীভাবে গর্ভাবস্থায় সচেতন থেকে অকাল জন্ম প্রতিরোধ করা যায় এবং প্রিটার্ম শিশুর যত্ন কেমন হওয়া উচিত।
অকাল জন্ম প্রতিরোধে করণীয়
১. পুষ্টিকর খাবার ও সাপ্লিমেন্ট:
গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রতিদিন পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্যগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য ভিটামিন-যুক্ত খাবার গর্ভকালীন জটিলতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
২. ধূমপান ও মাদক দ্রব্য এড়িয়ে চলুন:
তামাকজাত দ্রব্য বা এলকোহলজাত কিছু গ্রহণ করলে প্লাসেন্টার রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, যা শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত করতে পারে।
৩. প্রথম থেকেই আল্ট্রাসাউন্ড করান:
গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে আল্ট্রাসাউন্ড করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনি কত সপ্তাহের গর্ভবতী এবং একাধিক শিশু গর্ভে এসেছে কিনা। এতে চিকিৎসক সময়মতো উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে পারবেন।
৪. নিয়মিত চিকিৎসা পরামর্শ নিন:
পুরো গর্ভকালীন সময়ে অন্তত ৮ বার ডাক্তারের চেকআপ করানো উচিত। সংক্রমণ বা রক্তচাপ জনিত ঝুঁকি আগে থেকেই জানা গেলে সেগুলোর প্রতিরোধ সম্ভব।
যদি অকাল জন্মের ঝুঁকি থাকে?
যদি গর্ভবতী মায়ের নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রসব হবার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো যায়:
- স্টেরয়েড থেরাপি: শিশুর ফুসফুস পরিপূর্ণ করতে ব্যবহৃত হয়।
- টোকোলাইটিক চিকিৎসা: প্রসব বিলম্বিত করতে সহায়তা করে।
- অ্যান্টিবায়োটিক: PPROM (প্রিটার্ম মেমব্রেন ফেটে যাওয়া) প্রতিরোধে কার্যকর।
প্রিটার্ম শিশুর যত্নে করণীয়
২০২২ সালে WHO প্রিটার্ম শিশুদের যত্নে কিছু আপডেটেড গাইডলাইন দিয়েছে:
১. ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার (KMC):
শিশু জন্মানোর সাথে সাথেই মায়ের বুকের সাথে চামড়া-মিশে থাকা অবস্থায় রাখা, যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও ইমিউন সাপোর্টে সহায়তা করে।
২. শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান:
প্রথম ১ ঘণ্টার মধ্যেই শিশুকে মায়ের দুধ দিন। এতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
৩. CPAP ও ক্যাফিন থেরাপি:
শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিলতা দূর করতে CPAP ব্যবহার ও ক্যাফিন থেরাপি কার্যকর। এটি শিশুর মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।
পরিবারের ভূমিকা
একটি প্রিটার্ম শিশুকে যত্নে রাখার জন্য পরিবারের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। যেমন:
- শিশুকে সবসময় মায়ের সান্নিধ্যে রাখা।
- ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
- নিয়মিত রোদে দেওয়া ও গোসল করানো।
- অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম থেকে দূরে রাখা।
- সময়মতো ওজন ও স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ।
অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীরা যেন নিয়মিত পরিবারের পাশে থাকেন এবং প্রয়োজনমতো কাউন্সেলিং করেন, তা নিশ্চিত করাও জরুরি।
বিশ্ব শ্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর নির্দেশনা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বিশ্বব্যাপী শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং সময়ের আগে জন্মানো (প্রিটার্ম) শিশুদের মৃত্যুহার কমাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এই সংস্থা তাদের সদস্য রাষ্ট্র ও অংশীদারদের সাথে মিলিতভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যেন প্রতিটি শিশু পায় একটি সুস্থ ও নিরাপদ জীবন।
WHO নিয়মিত গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা, প্রিটার্ম শিশুর জন্মঝুঁকি কমানো এবং কম ওজনের নবজাতকের যথাযথ যত্নের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়ে থাকে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী, একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য সঠিক সময়ে চিকিৎসা, পুষ্টি, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই নির্দেশনাগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো:
- গর্ভাবস্থায় জটিলতা প্রতিরোধে সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া।
- সময়ের আগেই শিশুর জন্মের ঝুঁকি হ্রাস করা।
- প্রিটার্ম ও কম ওজনের নবজাতকের জন্য বিশেষ যত্ন ও সাপোর্ট নিশ্চিত করা।
- মা ও শিশুর জন্য নিরাপদ ও সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতি গড়ে তোলা।