Parenting Point

বেবি বার্পিং ( নবজাতকের ঢেকুর তোলা )

baby burp

নবজাতকের যত্নে বেবি বার্পিং বা ঢেকুর তোলা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, কারণ খাওয়ার সময় বাচ্চার পেটে যে অতিরিক্ত গ্যাস জমে তা বার্পিংয়ের মাধ্যমে বের হয়ে আসে। এতে শিশুর পেটের অস্বস্তি, গ্যাসের সমস্যা, এবং হজমজনিত জটিলতা কমে যায়। আসুন, এই আর্টিকেলে জেনে নিই বেবি বার্পিংয়ের সঠিক পদ্ধতি ও এর গুরুত্ব।

baby burp

কেন বেবি বার্পিং জরুরি?

নবজাতক যখন দুধ টেনে খেতে থাকে, মুখ দিয়ে তখন খানিকটা বাতাসও গিলে ফেলে। এই বাতাস শিশুর পেটে গ্যাস তৈরি করে। পেটে অস্বস্তি বোধ করায় শিশু অনবরত কান্না করে, হাত মুঠ করে হাত–পা ছোড়াছুড়ি করে, মুখ থেকে দুধ বের করে দেয়। বেবি বার্পিং এর মাধ্যমে এই গ্যাস সহজেই বের হয়ে যায়, যা শিশুকে আরাম দেয় এবং হজমে সাহায্য করে।

বেবি বার্পিংয়ের সঠিক পদ্ধতি

নবজাতককে বার্প করানোর সময় কিছু সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। নিচে কয়েকটি সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো:

baby burp

কাঁধের উপর ধরে বার্পিং:

  • শিশুর মাথা সোজা রেখে কোলে নিয়ে শিশুর মুখ নিজের কাঁধের ওপর রাখবেন ।
  • এক হাতে শিশুর পিঠে হালকা চাপড় দিবেন।
  • চাইলে শিশুকে আরও খানিকটা ওপরে তুলে তার পেট কাঁধের ওপর রেখেও পিঠে চাপড় দিতে পারবেন ।
  • এটি বারবার করতে হতে পারে। তবে লক্ষ্য রাখবেন যেন শিশুর মাথা ও ঘাড় আরেক হাত দিয়ে ভালো করে সাপোর্ট দেওয়া থাকে।
baby burp

বসানো অবস্থায় বার্পিং:

  • শিশুকে কোলের ওপর বসিয়েও হাতের তালু দিয়ে পিঠে হালকা চাপড় দিয়ে ঢেকুর তোলাতে পারবেন ।
  • এ ক্ষেত্রে আরেক হাতে শিশুর বুক ও চোয়াল ধরে শিশুকে সাপোর্ট দিতে হবে, যাতে শিশুর মাথা সোজা থাকে।
  • হাতের তালু খানিকটা ভাঁজ করে কাপের মতো করে পিঠে বারবার চাপড় দিবেন তাহলে আরও ভালো ফল পাবেন ।
baby burp

পেটের উপর শুইয়ে বার্পিং:

এ ছাড়া শিশুকে হাঁটুর ওপর, উপুড় করে শুইয়ে রেখে পিঠে চাপড় দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রেও শিশুর থুঁতনি ধরে তাকে সাপোর্ট দিতে হবে।

কখন বার্প করানো উচিত?

খাবারের মাঝে ও পরে: শিশুকে খাওয়ানোর মাঝে একবার ও খাওয়ানো শেষ হওয়ার পর অবশ্যই বার্প করানো উচিত।

 বাচ্চা যদি অস্বস্তি বোধ করে: যদি শিশুকে অস্বস্তি বোধ করতে দেখেন, তার মানে তার পেটে গ্যাস জমেছে। তখনই বার্প করানোর চেষ্টা করুন।

কতক্ষণ ধরে বার্প করাবেন?

বাচ্চার বার্প করানোর সময় ধৈর্য ধরে কাজটি করতে হবে। ৫-১০ মিনিট ধরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে চেষ্টা করুন। বারবার বার্প না হলে, কিছুক্ষণ পর পুনরায় চেষ্টা করুন।

বার্পিংয়ের পর সাবধানতা

  • বার্প করানোর পর শিশুকে কিছুক্ষণ সোজা অবস্থায় রাখুন। এতে দুধ উঠে আসার ঝুঁকি কমে যায় এবং পেটে হজম প্রক্রিয়া ভালোভাবে কাজ করে।
  • প্রতিটি পদ্ধতিতে খেয়াল রাখতে হবে ঢেকুর তোলার সময় শিশুর নাক যেন খোলা থাকে, সে যেন ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে।

কত দিন পর্যন্ত বার্পিং জরুরি

শিশু সোজা হয়ে বসতে শিখলে এটা করার আর প্রয়োজন হয় না। সাধারণত ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যেই এটা ঘটে থাকে, তবে কারও কারও ৯ মাস পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে। যখন মা মনে করবেন দুধ পানের পরপর শিশু আর কান্না ও অস্বস্তি বোধ করছে না, তখন থেকে এটা করার আর দরকার হবে না।

নবজাতকের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য বেবি বার্পিং অত্যন্ত জরুরি। সঠিক পদ্ধতিতে এবং সময়মতো বার্প করানোর মাধ্যমে আপনি আপনার শিশুকে আরাম দিতে এবং সুস্থ রাখতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *