নবজাতকের সেবা

নবজাতকের অত্যাবশ্যকীয় সেবা সমূহ

নবজাতকের জন্মের পর প্রথম কয়েকটি মুহূর্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ যত্ন ও সেবার প্রয়োজন। নবজাতকের সুস্থতা ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে তার প্রাথমিক যত্নের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য। এই প্রাথমিক সেবায় অন্তর্ভুক্ত থাকে সঠিক পরিচর্যা, সঠিক পুষ্টি প্রদান, সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা এবং উষ্ণতার ব্যবস্থা করা। এর মাধ্যমে নবজাতককে জীবন শুরুর সঠিক ভিত্তি প্রদান করা হয় যা তার ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নবজাতকের অত্যাবশ্যকীয় সেবা সমূহঃ

  • প্রসবের সাথে সাথেই নবজাতককে পরিস্কার শুকনা নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। আরেকটি শুকনো পরিষ্কার নরম কাপড়ে নবজাতককে মুড়িয়ে মায়ের কোলে দিন।
  • নবজাতককে জন্মের সাথে সাথেই (১ ঘণ্টার মধ্যে) গর্ভফুল পড়ার অপেক্ষা না করে মায়ের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে। মায়ের দুধ ছাড়া নবজাতককে অন্য কোনো কিছুই (যেমন – মধু, পানি, চিনির পানি) খাওয়াবেন না, কারণ এগুলো নবজাতকের জন্য ক্ষতিকর।
  • নবজাতককে গরম রাখুন ও জন্মের পর ৭২ ঘণ্টার আগে গোসল করাবেন না, কারণ গোসল করালে নবজাতকের ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
  • নবজাতক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে কিনা তা খেয়াল করুন।
  • নবজাতকের নাভির যত্ন নিন । নাভির গোড়ায় কোনোকিছু লাগাবেন না।
  • কম ওজন নিয়ে জন্মানো ও স্বাভাবিক সময়ের পূর্বে জন্মানো নবজাতকের বিশেষ যত্ন নিন , যেমন – দুধ টেনে খেতে না পারলে মায়ের দুধ চেপে বের করে খাওয়াতে হবে, মায়ের বুকে রেখে গরম রাখতে হবে।
  • নবজাতকের ত্বক ও চোখের সঠিক যত্ন নিন।
  • নবজাতকের যেকোনো বিপদচিহ্ন দেখামাত্রই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।

নবজাতককে মোড়ানোর পদ্ধতিঃ

  • এক টুকরা নরম, শুকনো ও পরিস্কার সুতি কাপড়ের উপর নবজাতককে শুইয়ে দিবেন।
  • লক্ষ্য রাখবেন যেন কাপড়ের কিছু অংশ নবজাতকের মাথার উপরের দিকে ও কিছু অংশ নবজাতকের পায়ের নিচের দিকে বাড়তি থাকে।
  • প্রথমে মাথার উপরের দিকের কাপড়ের বাড়তি অংশ দিয়ে নবজাতকের মাথা কপাল পর্যন্ত ঢেকে নিবেন। তারপর কাপড়ের উপরের দুই কোনা টেনে নবজাতকের দুই কাঁধ ঢেকে দিন।
  • এবার নবজাতকের পায়ের দিকের কাপড়ের বাড়তি অংশ দিয়ে পা গুলো চমৎকারভাবে ঢেকে দিন।
  • এরপর নবজাতকের শরীরের দুই পাশের বাড়তি কাপড় দিয়ে বুক ও পেট ভালোভাবে ঢেকে দিন।
  • পুরোপুরি মোড়ানোর পর নবজাতককে গরম রাখার জন্য মায়ের বুকে দিন।
  • মায়ের বুকে দেওয়ার পরপরই নবজাতককে শালদুধ খাওয়াতে সহায়তা করুন।

নবজাতক জন্মের পরপর শ্বাস না নিলে

               যা করা উচিত

           যা করা উচিত নয়

  • পরিষ্কার ও নরম কাপড় দিয়ে নবজাতকের সম্পূর্ণ শরীর ভালো করে মুছতে হবে
  • নাকে ও মুখে ময়লা লেগে থাকলে তা আঙুল দিয়ে পরিষ্কার ও নরম কাপড় পেঁচিয়ে পরিচ্ছন্ন করতে হবে
  • নবজাতককে কাত করে পিঠে শিরদাঁড়া নিচ থেকে উপর দিক বরাবর হাতের তালুর নিচের অংশ দিয়ে ঘষতে হবে
  • নবজাতকের রঙ এবং শ্বাসের দিকে লক্ষ্য করতে হবে। যদি ঠোঁট, জিহ্বা ও মুখের রঙ গোলাপি হয় এবং অনিয়মিত শ্বাস নিতে থাকে তাহলে নবজাতককে মায়ের বুকে দিতে হবে
  • এরপর ও নবজাতক শ্বাস না নিলে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হবে
  • পা ধরে নবজাতককে উল্টো করে ঝোলানো উচিত নয়
  • নবজাতককে থাপ্পড় দেয়া উচিত নয়
  • নবজাতকের মুখে অথবা শরীরে ঠাণ্ডা পানি ছিটানো উচিত নয়
  • কানে অথবা নাকে ফুঁ/বাতাস দেয়া উচিত নয়
  • পানিতে চুবানো উচিত নয়
  • বুকের খাঁচায় চাপ দেয়া উচিত নয়
  • গর্ভফুল গরম করা উচিত নয়
  • গর্ভফুল পড়ার অপেক্ষায় নবজাতককে ফেলে রাখা উচিত নয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version