স্মার্ট প্যারেন্টিং

শিশুর সামনে যে বিষয়ে আলোচনা করবেন না

পারিবারিক জীবনে কিছু কিছু সংবেদনশীল বিষয় থাকে, যেগুলো শিশুর সামনে আলোচনা করা ঠিক না। শিশুর সঙ্গে শিশুর মতো করেই মিশতে হবে। শিশুর বেড়ে ওঠার স্বাভাবিকতায় যাতে ছন্দপতন না হয় পাশাপাশি ‍শিশুর মনের উপর ওপর যাতে চাপ না পড়ে— সে কারণেই শিশুর সামনে নিচে উল্লেখিত বিষয়ে কথা বলা যাবে না।

what not to speak in front of your child

১. আর্থিক অবস্থাঃ আপনার পরিবারের আর্থিক অবস্থা যেমনই হোক না কেন, শিশুর সামনে তা আলোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। আর্থিক সমস্যার ভেতর দিয়ে গেলেও শিশুকে তা বুঝতে দেওয়া যাবে না। আবার আপনি যদি বিলিয়নিয়ার হন, সেটির বাড়াবাড়ি প্রকাশও শিশুর স্বাভাবিক মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

২. দাম্পত্য সমস্যাঃ নিজেদের দাম্পত্যজীবনের যেকোনো সমস্যা কেবল শিশু কেন, যে কারও থেকেই আড়ালে রাখার চেষ্টা করুন। নিজেদের সমস্যা যথাসম্ভব গোপনীয়তা বজায় রেখে নিজেরা আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করুন। প্রয়োজনে বাসার বাইরে কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে খোলামেলা আলাপ করুন। শিশুর সামনে কোন অবস্থায় এসব বিষয়ে আলাপ করা যাবে না। এতে শিশুর মনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। মা ও বাবা যে কারও প্রতি, এমনকি দুজনের প্রতিই শিশুর দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যেতে পারে।

৩. যুদ্ধ, হানাহানি, গোলাগুলি, রাজনৈতিক অস্থিরতাঃ দেশে বা বিশ্বের কোথাও যদি কোনো জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়, যুদ্ধ চলে, এসব নৃশংসতা নিয়ে শিশুর সামনে আলাপ না করাই ভালো। এমনকি কম্পিউটার, মুঠোফোন বা টেলিভিশনের (সিনেমা বা বাস্তবে) নৃশংসতার কোন দৃশ্য শিশুর সামনে দেখবেন না। এতে শিশুর কোমল মনে গভীর ছাপ ফেলতে পারে।

৪. অন্যের সমালোচনাঃ শিশুর সামনে অন্যকে ‘জাজ’ করা বা সমালোচনা করা যাবে না। বিশেষ করে পরিবারের অন্য সদস্য যেমন: ওই শিশুর নানা–নানি, দাদা–দাদি, খালা–ফুফু বা মামা–চাচার সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করতে যাবেন না। প্রথমত, তা শিশুর ওই ব্যক্তির প্রতি স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করবে। আর দ্বিতীয় সমস্যাটি আরও গুরুতর। শিশু ওই ব্যক্তির কাছে গিয়ে গড়গড় করে বলে দেবে যে আপনি তাঁর সম্পর্কে ‘উল্টাপাল্টা’ কী বলেছেন! ধরুন, শিশু তার দাদিকে গিয়ে বলল, ‘জানো, মা বলেছে তুমি নাকি পচা। কানে কানে আরেকটা কথা বলি শোনো, তোমাকে যে বললাম, মাকে কিন্তু বলবে না। আমাকে বলতে নিষেধ করেছে। আর এই চকলেটটা দিয়েছে।’

৫. শারীরিক জটিলতাঃ শিশুর সামনে জটিল কোনো অসুখ বা রোগ নিয়ে আলাপ করবেন না। 

৬. হতাশা বা মানসিক জটিলতাঃ শারীরিক সমস্যার মতো মানসিক জটিলতাও সমান গুরুতর। তাই আপনার শিশুর সামনে ব্যক্তিগত হতাশা, অফিসের চাপ, মানসিক সমস্যা নিয়ে আলাপ করবেন না। এটা তাকেও প্রভাবিত করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Trending

Exit mobile version